আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনাটি প্রকাশিত হয়। মামলার ৫৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা। তিনি জানান, তদন্তে শেখ হাসিনার ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল নম্বরের সিডিআর ও মোট ৬৯টি অডিও ক্লিপ জব্দ করা হয়। এর মধ্যে চারটি কল রেকর্ড ট্রাইব্যুনালে প্লে করে শোনানো হয়।
শুনানিতে প্লে করা একটি কল রেকর্ডে শেখ হাসিনা তাপসকে বলেন—
“আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে, ওপেন নির্দেশনা দিয়ে দিছি, এখন লেথাল ওয়েপন ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সোজা গুলি করবে।”
এ ছাড়া কথোপকথনে শেখ হাসিনাকে ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে রাতের বেলা ধরপাকড়, ড্রোন নজরদারি ও র্যাব-ডিজিএফআইকে মাঠে নামানোর নির্দেশ দিতেও শোনা যায়।
প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম। অন্যদিকে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন শুনানিতে অংশ নেন।
মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হয়েছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর বাইরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে—একটি আওয়ামী সরকারের সময়ে গুম-খুনের অভিযোগে, অন্যটি ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
ছাত্র–জনতার গত বছরের গণঅভ্যুত্থান দমনে আওয়ামী লীগ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার ফলে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে—এমন অভিযোগ নিয়ে বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলছে।