১৯৯৯ সালে শেখ আবদুল আজিজ বিন বাজ-এর উত্তরসূরি হিসেবে গ্র্যান্ড মুফতি নিযুক্ত হন শেখ আল-শেখ। এরপর থেকে টানা দুই দশকেরও বেশি সময় সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের আসনে থেকে ইসলামী শরিয়ার ব্যাখ্যা, বিভিন্ন সামাজিক ও আইনি ইস্যুতে ফতোয়া প্রদান এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছিলেন তিনি।
তিনি ছিলেন কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলার্স-এর চেয়ারম্যান, জেনারেল প্রেসিডেন্সি অব স্কলারলি রিসার্চ অ্যান্ড ইফতা’র প্রেসিডেন্ট এবং মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সুপ্রিম কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।
তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ মসজিদে আসরের নামাজের পর। পাশাপাশি, সরকার নির্দেশ দিয়েছে মক্কার মসজিদুল হারাম, মদিনার মসজিদে নববীসহ রাজ্যের সব মসজিদে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগ বিশ্বব্যাপী ইসলামী কেন্দ্র ও মসজিদগুলোতেও তার জন্য গায়েবানা জানাজার আহ্বান জানিয়েছে।
রিয়াদের একজন ইমাম আব্দুলআজিজ আললুহাইদান তাকে বর্ণনা করেছেন “উম্মাহর অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম, যিনি জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন।” তার মতে, শেখ আল-আশেখের ফতোয়া ছিল আকিদা, ফিকহ, লেনদেন থেকে শুরু করে সমসাময়িক নানা ইস্যুর এক সমৃদ্ধ বিশ্বকোষ।
শরিয়াহ বিশেষজ্ঞ আব্দুল্লাহ আহমদ বলেন, “তিনি ছিলেন ইসলামী জ্ঞানের অন্যতম নির্ভরযোগ্য উৎস। সমসাময়িক আর্থিক লেনদেন ও শরিয়াহভিত্তিক আইন প্রয়োগে তার দিকনির্দেশনা ছিল অমূল্য।”
আরেকজন শারিয়াহ শিক্ষাবিদ রাঘাদ আল-হাওরিনি বলেন, “তিনি ছিলেন দিকনির্দেশনার বাতিঘর ও সত্যে অবিচল এক আলেম। মিম্বার, মসজিদ ও ফতোয়া পরিষদ—জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই শরিয়াহর সেবা করেছেন।”
শেখ আল-আশেখের মৃত্যু সৌদি আরবের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এক যুগের অবসান। তার নেতৃত্ব ঐতিহ্যবাহী ইসলামী গবেষণাকে আধুনিক রাষ্ট্রের চাহিদার সঙ্গে যুক্ত করেছে। ফতোয়াগুলোতে তিনি আইনি ও আর্থিক বিষয়ে আধুনিক সমাধান খুঁজেছেন, তবে শরিয়াহর মূলনীতিতেই অবিচল থেকেছেন।
তার রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মের আলেম ও সমাজের জন্য চিরকাল দিকনির্দেশনার উৎস হয়ে থাকবে।