ব্ল্যাক মুন কী?
আজকের রাতের বিশেষত্বের মূল কেন্দ্র হলো ব্ল্যাক মুন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রতি ৩৩ মাসে একবার এ ধরনের ঘটনা লক্ষ্য করেন। সাধারণত প্রতিটি ঋতুতে (বসন্ত, গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত) তিনটি নতুন চাঁদ থাকে। কিন্তু চন্দ্রচক্র প্রায় ২৯.৫ দিনের হওয়ায় কখনও কখনও কোনো ঋতুতে চারটি নতুন চাঁদ পড়ে যায়। সেই ক্ষেত্রে তৃতীয় নতুন চাঁদকে বলা হয় ব্ল্যাক মুন।
যদিও এটি দেখতে সাধারণ নতুন চাঁদের মতোই—অদৃশ্য, কারণ এর আলোকিত অংশ পৃথিবীর বিপরীতে থাকে। তবে এর বিশেষত্ব হলো এর সময়কাল—আগস্টের শেষদিকে এটি পড়ায় আকাশ থাকবে সম্পূর্ণ অন্ধকার, যা আজকের রাতকে আরও বিশেষ করে তুলবে।
পারসেইড উল্কাবৃষ্টি—শেষ সুযোগ
বিশ্ববিখ্যাত পারসেইড মিটিওর শাওয়ার বা উল্কাবৃষ্টি প্রতিবছর আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তবে এ বছর ২৪ আগস্ট পর্যন্ত এটি সক্রিয় থাকবে। আজ (২২–২৩ আগস্ট রাত) উল্কার সংখ্যা কিছুটা কম হলেও ব্ল্যাক মুনের অন্ধকার আকাশের কারণে ক্ষুদ্র উল্কাও খালি চোখে দেখা যাবে।
অর্থাৎ, এ রাতই হলো এ বছরের শেষ সুযোগ আকাশে ছুটে চলা উল্কার ঝলকানি দেখার।
মিল্কিওয়ে—মহাবিশ্বের মহিমান্বিত রূপ
আজকের রাতের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মিল্কিওয়ে। জুলাই–আগস্ট হলো গ্যালাক্সির কেন্দ্র দেখার সেরা সময়। এ সময় পৃথিবীর রাতের অংশ সরাসরি সাজিটারিয়াস নক্ষত্রপুঞ্জের দিকে মুখ করে থাকে, যেখানে গ্যালাক্সির ঘনতম, উজ্জ্বলতম অংশ অবস্থিত।
অগণিত তারকা, নক্ষত্রগুচ্ছ, নীহারিকা আর অন্ধকার ধূলিকণার পথ জড়িয়ে তৈরি হয় আকাশের জ্বলজ্বলে এক বিশাল ব্যান্ড—মিল্কিওয়ে। মধ্যরাতের পর এটি আকাশ জুড়ে বাঁক নিয়ে উঠে আসে।
শহরের আলোক দূষণ থেকে দূরে গেলে এর পূর্ণ সৌন্দর্য খালি চোখেই দেখা সম্ভব।
কোথায় সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে?
আজকের মহাজাগতিক উৎসব সবচেয়ে ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন উত্তর গোলার্ধের মানুষজন। বিশেষ করে—
গ্রামীণ এলাকা বা পাহাড়ি অঞ্চল
শহরের আলো থেকে দূরে খোলা আকাশ
রাত ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত
আজকের রাত একেবারেই ভিন্ন। বিরল ব্ল্যাক মুন, পারসেইড উল্কাবৃষ্টি আর মিল্কিওয়ের জ্যোৎস্নাময় রূপ মিলিয়ে আকাশ হয়ে উঠবে মহাজাগতিক ক্যানভাস। চোখ খুলে তাকালেই মনে হবে, আমরা বিশাল মহাবিশ্বের ছোট্ট এক দর্শক মাত্র।
আজ রাত তাই আকাশপানে তাকিয়ে থাকার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।