বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানিতে এই কল রেকর্ড উপস্থাপন করা হয়। মামলার ৫৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন প্রসিকিউটর ও বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
তার বক্তব্যে উঠে আসে, শেখ হাসিনার ৬৯টি অডিও ক্লিপ ও তিনটি মোবাইল নম্বরের সিডিআর জব্দ করা হয়। এর মধ্যে চারটি কল রেকর্ড ট্রাইব্যুনালে প্লে করা হয়। একটি ফোনালাপে শেখ হাসিনা ও ইনুর আলাপে শোনা যায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার দিয়ে হামলার পরিকল্পনার কথা।
ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়— “আকাশ থেকে নামবে, তখন দুই পাশ দিয়ে ধরবে… আর হেলিকপ্টার দিয়ে সোজা বোম্বিং করা হবে, র্যাবের হেলিকপ্টার দিয়ে ওপর থেকে মারবে।” জবাবে ইনু বলেন, “কারফিউ শেষে যেন মিছিল নামতে না পারে সে ব্যবস্থা নিতে হবে, আর আন্দোলনকারীদের লিডারদের চিহ্নিত করে রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার করতে হবে।”
তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এসব আলাপে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে দমননীতি, গ্রেপ্তার অভিযান ও সহিংস কৌশলের প্রমাণ মেলে। প্রসিকিউশন পক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও আসামি। গত ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতোমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এ মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর একটি গুম–খুনের অভিযোগে এবং অন্যটি মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে।